ঝড়-বৃষ্টি, বর্ষাকালে বাইক চালানোর সময় যেসব প্রস্তুতি খুব প্রয়োজনীয়
2019 Jul 02 18:34:00
যান্ত্রিক এ শহরে ট্রাফিক
জ্যাম যেন চিরচেনা একটি
দৃশ্য। জ্যামের কারণে যেমন
আমাদের শরীরে ক্লান্তি চলে
আসে ঠিক তেমনি নষ্ট হয় সময়। আর
তাই এ সমস্যা থেকে রেহাই
পাওয়ার জন্য চাহিদা বেড়েছে
মোটরসাইকেলের।
এদিকে, বিভিন্ন রাইড শেয়ারিং
অ্যাপস এর মাধ্যমে আমরা
মোটরসাইকেল ভাড়া করে বিভিন্ন
জায়গায় গেলেও অনেকেই আবার
নিজস্ব বাইক ব্যবহার করেন।
তবে রাইড শেয়ারিং মোটরসাইকেল
হোক কিংবা নিজের, ঝড়ো
আবহাওয়ায় বাতাসের দাপট
কিন্তু সবারই সহ্য করতে হয়।
আর এমন পরিস্থিতে নিয়ন্ত্রণ
হারিয়ে যাওয়ার কারণে ঘটি
দুর্ঘটনা।
পাঠক এমন পরিস্থিতি থেকে
পরিত্রান পাওয়ার উপায় আজ
আপনাদের ডেইলি বাংলাদেশ
জানিয়ে দিবে-
* যখনই আপনি দেখবেন তীব্র
বাতাস শুরু হয়েছে তখনই আপনার
প্রথম কাজ হবে বাইকটি থামিয়ে
নিরাপদ জায়গায় পার্ক করা এবং
নিজে একটি নিরাপদ স্থানে
আশ্রয় নেয়া। সাধারনত এরকম
তীব্র বাতাসের সঙ্গে প্রচুর
ধূলো উড়ে আসে, কাজেই সেগুলো
সম্পর্কে সাবধানে থাকুন এবং
হেলমেট এর ভাইজর নামিয়ে
রাখতে ভুলবেন না!
* ঝড়ের মাঝে রাইড করার
সিদ্ধান্ত খুবই খারাপ।
বাতাসের প্রচন্ড বেগ, ভারী
বর্ষণ এবং ধূলো সবকিছু
মিলিয়ে ঝড়ের মাঝে বাইক রাইড
করলে দুর্ঘটনা হওয়ার প্রবনতা
বেশি থাকে। তাই একজন সচেতন
রাইডার এর উচিত ঝড়ের মাঝে
রাইড করা থেকে বিরত থাকা।
ঝড়ো আবহাওয়ায় রাইডিং টিপস
আমরা সবাই হয়তো জানি, যে
চাইলেও অনেকসময় আমরা থেমে ঝড়
শেষ হবার অপেক্ষা করতে পারবো
না। অনেক ক্ষেত্রেই ঝড়ে থেমে
থাকার মতো সময় আমাদের হাতে
থাকে না এবং অনিচ্ছাসত্ত্বেও
আমাদের ঝড়ের মাঝে বাইক
রাইডিং করতে হয়। এরকম
পরিস্থিতিতে এগুলো মেনে চললে
কিছুটা হলেও সুবিধা পাওয়া
যাবে:-
টায়ার প্রেশার নূন্যতম রাখা:
ঝড়-বৃষ্টির মৌসুমে বাইকের
টায়ার প্রেশার ক্যাটালগে
যেটি দেয়া আছে তা থেকে কিছুটা
কম রাখুন। এতে ফলে ঝড়ের মধ্যে
রাস্তায় ভাল গ্রিপ পাওয়া
যাবে।
ধীর গতিতে বাইক চালান: যখনই ঝড়
শুরু হবে, আপনার বাইকের গতি
কমিয়ে আনুন এবং সাবধানতার
সঙ্গে রাইড করুন। কারণ ঝড়ো
বাতাস এবং বৃষ্টিভেজা
রাস্তায় আপনার বাইক খুব
সহজেই নিয়ন্ত্রন হারিয়ে
ফেলতে পারে। কাজেই, ঝড়ের সময়
খুবই কম গতিতে বাইক চালান এবং
যেকোন ঝূকিপূর্ণ ওভারটেক ও
লেন পরিবর্তন থেকে বিরত
থাকুন।
ধীরে ব্রেক করুন: ঝড়ো
আবহাওয়ায় হঠাৎ ব্রেক না করে
খুবই ধীরে ব্রেক করুন।
যেহেতু রাস্তা বৃষ্টিতে ভিজে
খুবই পিচ্ছিল হয়ে পড়ে তাই
হটাৎ ব্রেক করলে বাইকের
টায়ার পর্যাপ্ত গ্রিপ দিতে
পারে না এবং দুর্ঘটনা ঘটে।
কাজেই, বৃষ্টি এবং ঝড়ের সময়
ধীরগতিতে ব্রেক করুন যাতে
টায়ারে অধিক প্রেশার না পড়ে।
বাতাসের দিকে লক্ষ্য রাখুন:
অধিকাংশ সময়েই বৃষ্টি বা
ধূলো নয়, বরং ঝড়ো বাতাস
রাইডারকে বিপদে ফেলে দেয়।
সাধারনত ঝড়ের সময় প্রচন্ড
জোরে বাতাস বয় এবং ঝড়ো
বাতাসের গতিবিধি পরিবর্তন
হয়। কাজেই, বাতাসের গতিবধি
লক্ষ্য রাখুন যাতে করে
সামনে/পেছনে/পাশ থেকে হটাৎ
করে ঝড়ো বাতাস এসে বাইকের
কন্ট্রোলিং এর কোন প্রকার
প্রভাব না ফেলে।
সবসময় রেইনকোট ব্যবহার করুন:
এটা খুব সম্ভবত বৃষ্টির
মৌসুমে রাইডারদের শোনা
সবচাইতে কমন টিপস– তবে, এটা
খুবই উপকারী একটি পরামর্শ!
যেহেতু এই মৌসুমটি খুবই
অনিশ্চয়তায় ভরপুর এবং খা খা
রোদের দুপুরেও হটাৎ করে
তীব্র ঝড় শুরু হয়ে যেতে পারে
তাই আপনার উচিত নিজেকে যেকোন
পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত
রাখা। কাজেই, সর্বদা রেইনকোট
বহন করুন। যে কোন ঝড়ের
পরিস্থিতিতে এটা আপনাকে
শুকনো রাখবে এবং ধূলিঝড় এর
ক্ষেত্রে আপনাকে ধূলোবালি
থেকে সুরক্ষা দেবে।
সর্বদা ফুল ফেস হেলমেট
ব্যবহার করুন: একজন বাইকারের
প্রথম প্রায়োরিটি হওয়া উচিত
একটি ফুল ফেস হেলমেট। একটি
ফুল ফেস হেলমেট শুধুমাত্র
দুর্ঘটনা থেকেই সুরক্ষা দেয়
না বরং তীব্র বাতাস, ধূলোবালি
এবং বৃষ্টি থেকেও রাইডারকে
রক্ষা করে। হাফ ফেস হেলমেট এর
ক্ষেত্রে বিশাল সম্ভাবনা আছে
যে হেলমেট এর ভেতরে ধূলোবালি
এবং বৃষ্টির পানি প্রবেশ
করবে, তবে একটি ফুল ফেস হেলমেট
এ সবকিছু থেকেই রাইডারকে
সম্পূর্ন সুরক্ষা দেয়।
শেষ কথা হচ্ছে, একজন অভিজ্ঞ
রাইডারও বৃষ্টিতে রাইড করার
সময় সমস্যায় পড়তে পারে।
কাজেই ঝড়ো আবহাওয়ায় রাইড করা
থেকে বিরত থাকাই সেরা
সিদ্ধান্ত।
তবে, যদি একান্তই কেউ ঝড়ো
আবহাওয়াতে রাইড করতে বাধ্য
হয়, তবে অবশ্যই উপরের বর্নিত
নিয়মগুলো অনুসরণ করতে পারেন।
সবসময় সাবধানতার সঙ্গে রাইড
করুন এবং অবশ্যই সর্বদা
হেলমেট পড়ে বাইক রাইড করুন।
সূত্রঃ ডেইলি বাংলাদেশ