অর্ডারের জন্য নির্বাচিত পন্যের তালিকা
চমৎকার থ্রটল রেসপন্সের জন্য খুবই পরিচিত TVS এর Apace RTR বাইকটি। রেডি পিকআপের জন্য বাইকটি যেমন নন্দিত আবার এই একই কারণে অনেকের কাছেই নিন্দিত। Apace RTR বাইকটি বাংলাদেশে প্রথম ১৬০ সিসি সেগমেন্টের বাইক। ন্যাকেড স্পোর্ট এই বাইকটি কয়েকটি পর্যায়ে উন্নয়ন করা হয়েছে। বিশেষকরে ব্রেকিং সিস্টেমের উন্নয়ন খুবই কাঙ্ক্ষিত ছিল, কনসল প্যানেলে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার তারাই প্রথাম নিয়ে এসেছে।
ইঞ্জিন
TVS Apace RTR 160 বাইকটি একটি ন্যাকেড স্পোর্টস বাইক। স্পোর্টস বাইকের ইঞ্জিনের ক্ষমতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাইকটিতে ১৫৯.৭ সিসি ডিসপ্লেসমেন্টের ৪ স্ট্রোক অয়েল কুল্ড ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে। বাইকটির এক অসাধারণ বিশেষত্ব হলো এর থ্রটল রেসপন্স। পিকআপ ঘুরানোর সাথে সাথেই ধাই করে গতি বেড়ে যাওয়াটা সব বাইকারকে অভিভুত করে। হইওয়েতে ওভারটেকিং-এর সময় এই রেডি পিকআপ খুবই কাজে দেয়। ইঞ্জিনটির ক্ষমতা ১৫.৬ বিএইচপি @ ৮২৫০ আরপিএম এবং সর্বোচ্চ টর্ক হচ্ছে ১৪.১২ এন এম @ ৭২৫০ আরপিএম। ৫ গিয়ার বক্সের আরটিআর ১৬০ বাইকের সর্বোচ্চ গতি ১১৪ কিমি। ফুয়েল ট্যাঙ্কে জ্বালানী ধারণ ক্ষমতা ১২ লিটার, রিজার্ভ থাকে ২.৫ লিটার।
TVS Apace RTR 160 ফুয়েল সাপ্লাইয়ের ক্ষেত্রে কার্বুরেটর ভার্সনই রয়েছে। অফ রোডের জন্য কার্বুরেটর ভাল বিবেচিত হলেও শহর অঞ্চলে এবং হাইওয়েতে ফুয়েল ইঞ্জেকশন অনেক সুবিধা দিয়ে থাকে। তাই অনেক বাইকার এফআই প্রত্যাশা করে থাকেন। আবার কার্বুরেটরের টেকনিক্যাল মেনটেইন্যান্স সব যায়গায় করা যায় এই বিবেচনা করলে TVS Apace RTR 160 তে এখনো কার্বুরেটরের ব্যবহারকে মন্দ বলা যায় না। কেননা এখনো আমাদের দেশে এফ আই একেবারেই নতুন প্রযুক্তি, তাই পল্লী এলাকায় এর মেনটেইন্যান্স অনেকটাই ঝামেলার।
শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ইঞ্জিন একই রয়েছে, কোনো পরিবর্তন আনা হয় নাই। TVS Apace RTR 160 তে ইগনিশন ব্যবহার করা হয়েছে টিসিআই (ট্রানজিস্টর কন্ট্রোলড ইগনিশন) ইগনিশন সিস্টেম।
Apace RTR তে ডবল ক্রেডেল ফ্রেম চেসিস ব্যবহার করা হয়েছ। ১৪৭ কেজি ওজনের বাইকটির এই চেসিস যথার্থ হয়েছে বলতে হবে। ২০৩৫ মিমি দৈর্ঘ্যের বাইকটির প্রস্থ ৭৯০ মিমি। সর্বোচ্চ উচ্চতা ১০৫০ মিমি। নির্বিঘ্ন রাইডিং-এর জন্য এই বাইকটিতে ১৮০ মিমি গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স রেখেছে বাজাজ মোটরস। স্পীডব্রেকার ও খানা খন্দকে এই গ্রাইন্ড ক্লিয়ারেন্স প্রত্যাশিত।
রাইডিং স্বাচ্ছন্দময় কারার জন্য সাসপেনশনের ভূমিকা অপরিসীম। Apace RTR 160 বাইকের রাইডিং প্রানবন্ত করতে এর সামনে টেলিস্কোপিক সাসপেনশন দেয়া হয়েছে আর সিটিতে বা হাইওয়ে সব রাস্তায় বেশ স্বাচ্ছন্দপূর্ণ রাইডিং পেতে পারেন। পেছনে দেয়া হয়েছে মনোটিউব ইনভার্টেড গ্যাসফিল্ড শক (MIG)। দ্রুত গতির সময় এই সাসপেনশন ঝাকুনি কমাতে অনেক ভাল কাজ করে।
ব্রেকিং সিস্টেম
Apace RTR 160 বাইকটি বাজারে ছাড়ার সময় সিঙ্গেল ডিস্ক ব্রেকিং সিস্টেম ব্যবহার করা হয়েছিল। ধাপে ধাপে বাইকটির ব্রেকিং সিস্টেমে উন্নয়ন করা হয়। বাকটির থ্রটল রেসপন্স থাকার কারণে এর গতি নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এমন বিবেচনায় সিঙ্গেল ডিস্ক ব্রেকিং সিস্টেম থেকে উন্নয়ন করে প্রথমে উভয় চাকাতেই ডিস্ক ব্রেকের সুবিধা নিয়ে আসা হয়।
ব্রেকিং সিস্টেম এর ক্ষেত্রে এবিএসের সুবিধা অনেক, Apace RTR এর রেডি পিকআপ নিয়ন্ত্রণে এবিএস সর্বোত্তম ব্রেকিং সিস্টেম হবে এটাই সাভাবিক, সম্ভবত এই বাস্তবতা বিবেচনায় TVS তাদের Apace RTR 160 বাইকেও সিঙ্গেল চ্যানেল এবিএস নিয়ে আসে। এবিএস সেন্সরে লক্ষণীয় একটি ব্যাপার রয়েছে। যা অন্যান্য বাইকের এবিএসে দেখা যায় না। Apace RTR 160 এর এবিএস সেন্সরটিকে একটি আবরন দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়েছে। আশাকরা যায় এতে ধুলি ময়লা থেকে মুক্ত থেকে এর সেন্সর পারফরমেন্স অনেক ভাল কাজ করবে। সেই সাথে এই নতুনত্ব একটি সৌন্দর্য তো বটেই।
সামনের ব্রেকের ব্রেক লিভার বেশ স্মুদ। লিভার টানার সময় শক্ত অনুভূতি হবে না। অনেকটা ক্লাচ লিভার টানার মত খুবই সহজেই টানতে পারা যায়। যা আঙ্গুলের ব্যাথা হওয়ার সম্ভাবনা দূর করে। সাধারণ ব্রেক কেবলের পরিবর্তে এই বাইকে মেটাল ব্রেক কেবল দেয়া হয়েছে। এটি সাধারণত আমাদের দেশের বাইকগুলোতে খুব একটা দেখা যায় না।
টায়ার ও চাকা
বাইকে এর দুটি টায়ারই টিউবলেস। TVS Apache RTR 160 4V তে টায়ারগুলোয় অনেক আধুনিক করা হয়েছে। ব্যবহার করা হয়েছে দুর্দান্ত গতির বাইকের উপযোগী আর দীর্ঘস্থায়ী ইউরোগ্রিপ প্রোটর্ক রেডিয়াল টায়ার। পেছনের টায়ারের মাপ ১১০/৮০-১৭ ৫৭পি এবং সামনের টায়ারটি ৯০/৯০-১৭ ৪৯পি সাইজের এটা সিঙ্গেল ডিস্কের বাইকের বেলায় ছিল। পরবর্তীতে ডাবল ডিস্কের বাইকে ১৩০/৭০ সাইজের টায়ার দিয়েছে টিভিএস। এবং বাইকটির চাকাগুলো ১০ স্পোকের এ্যালয় হুইল, সাইজটি ইউনিভার্সাল- ১৭ ইঞ্চি ।
বাইকের ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাইলের জন্য একটি মেইন্টেনেন্স ফ্রি ডিসি ১২ ভোল্ডের ব্যাটারি রয়েছে। ডিসি অপারেটেড হ্যালোজেন বাল্ব ব্যবহার করা হয়েছে হেডলাইটের জন্য। কনসল প্যানেলে এনালগ আর ডিজিটাল দুই ধরণের কম্বিনেশন রয়েছে। ডিজিটাল স্পীডোমিটারটি ও অডোমিটারের সাথে এনালগ টেকোমিটার ছিল শুরু থেকেই। এরপর ডিজিটাল মিটার বক্সে বাইকের স্পীড দেখার পাশাপাশি টাইম ফুয়েল সব দেখতে পাবেন। তবে গিয়ার ইন্ডিকেটর এখানে নাই।
সর্বশেষ ভার্সনে TVS SmartXonnect প্রযুক্তি এনেছে টিভিএস তাদের এই অ্যাপাচি আরটিআর ৪ ভি-তে। একেবারেই আধুনিক প্রযুক্তি কনসল প্যানেলে আপনার এ্যান্ড্রোয়েড মোবাইল ফোনের সাথে ব্লুটুথের মাধ্যমে সংযোগ করতে পারবেন। বাইকের বাম পাশের ইন্ডিকেটর সুইচের উপর একটি অতিরিক্ত বাটনের সাহায্যে ইনস্ট্রুমেন্ট ক্লাস্টার নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। এই স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহার করে এসএমএস, ইনকামিং কল দেখার সুবিধা পাবেন কনসল প্যানেলে। আই বাটন প্রেস করে রিপ্লাই দেয়ার সুযোগ রেখেছ এই স্মার্ট প্রযুক্তিতে। ফুয়েল রিজার্ভে চলে গেলে সেই সংকেত দেয়ার সাথে আপনি আই বাটনটি অল্প সময় চেপে ধরে থাকলেই কনসল প্যানেলে জানিয়ে দিবে কাছাকাছি কোন পেট্রল পাম্প রয়েছে । এই সুবিধা এখন পর্যন্ত এই বাইকটিতে শুধু পাচ্ছেন আমাদের দেশে।
বাইক স্টার্ট করতে ইলেকট্রিক সিস্টেম রয়েছে, সাথে সাথে কিক করেও বাইকটিকে স্টার্ট করার ব্যবস্থা রয়েছে।
অয়েল কুল্ড ইঞ্জিনে পাওয়ারের ভারসাম্য ভাল থাকে। এক্সিলারেশনের জন্য এই বাইকটিকে সেরা বলতেই হবে। এর প্রচন্ড ক্ষিপ্র রেডি পিকআপ অল্প সময়েই দারুন গতি এনে দেয়। ওভারটেকিং-এর সময় এর তুলনা হয়না। বাইকের মাইলেজের ব্যাপারে বলতে গেলে এক্সিলারেশনের কথা মাথায় রেখে হিসাব করতে হবে। যে বাইকের রেডি পিকআপ এত বেশি এবং ফুয়েল সাপ্লাই কার্বুরেটর। তারপরও সিটিতে ৩৮ কি.মি. প্রতি লিটারে আর হাইওয়েতে ৪৫ কি.মি. মাইলেজ। এটা অনেক সাশ্রয়ী না বললে অবিবেচনা করা হবে।
TVS Apache RTR 160 একটি ন্যাকেড স্পোর্টস বাইক। তা সত্যেও এটি কমিউটার ব্যবহারে খুব একটা সমস্যা হয় না। আর তাছাড়া আমাদের দেশে স্পোর্টস বাইকগুলো অনেক ক্ষেত্রে ট্যুর করতে বা কমিউটার ট্রাভলে খুব ব্যবহার করা হয়। এই দিক থেকে এই বাইকটি বেশ উপযোগী। অনেকেই এই বাইকটিকে কমিউটার বাইকের কাতারে না রাখলেও সরাসরি স্পোর্টস বাইক বলার বদলে স্পোর্টস বাইকের সমকক্ষ বলতে চান। তবে যে যাই বলুক TVS Apache RTR 160 বাইকটির স্পোর্টস লুক তো রয়েছেই। আর পারফরমেন্সের কারণে অনেক বাইকারের আগ্রহও ভীষণ। এরই সাথে একটি স্পোর্টস বাইক হিসেবে সাশ্রয়ী দাম থাকায় Apace RTR 160 বাইকটি অগণিত বাইকারের বাইকটি নিজের করে পাওয়ার প্রত্যাশাও পূরণ করেছে।
সর্বোচ্চ শক্তি | 15.1 bhp @ 8,400 rpm |
---|---|
সর্বোচ্চ টর্ক | 13.9 Nm @ 7,000 rpm |
এমিশন টাইপ | BS-VI |
ইঞ্জিন | 159.7 cc |
সিলিন্ডারের সংখ্যা | 1 |
বোর | পাওয়া যায়নি |
স্ট্রোক | পাওয়া যায়নি |
সিলিন্ডারে ভাল্ভের সংখ্যা | 2 |
কমপ্রেশন অনুপাত | পাওয়া যায়নি |
ইগনিশন | IDI-Dual mode digital ignition |
কুলিং সিস্টেম | Air Cooled |
ট্রান্সমিশন | 5 Speed Manual |
ক্লাচ | Wet, Multi Plate |
তেল সরবরাহ ব্যবস্থা | Fuel Injection |
জ্বালানী সক্ষমতা | 12 litres |
রিজার্ভ ট্যাঙ্ক | 2.5 litres |
মাইলেজ | পাওয়া যায়নি |
সর্বোচ্চ গতি | পাওয়া যায়নি |
সামনের ব্রেক | Disc |
সামনের ব্রেকের পরিধি | 270 mm |
পেছনের ব্রেক | Drum |
পেছনের ব্রেকের পরিধি | 130 mm |
ক্যালিপার টাইপ | পাওয়া যায়নি |
সামনের চাকার সাইজ | 17 inch |
পেছনের চাকার সাইজ | 17 inch |
সামনের টায়ার সাইজ | 90/90-17 49P Tubeless |
পেছনের টায়ার সাইজ | 110/80-17 57P Tubeless |
টায়ার টাইপ | Tubeless |
রেডিয়াল টায়ার? | Yes |
চাকার টাইপ | Alloy |
সামনের সাসপেনশন | Telescopic with Hydraulic Dampers. 105mm Stroke |
পেছনের সাসপেনশন | Monotube Inverted Gas-filled shox (MIG) with spring aid |
ওজন | 139 kg |
দৈর্ঘ্য | 2,085 mm |
প্রস্থ | 730 mm |
উচ্চতা | 1,105 mm |
হুইল বেইজ | 1,300 mm |
গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স | 180 mm |
অডোমিটার | Digital |
পেছনের পাদানি | Yes |
ইউএসবি চার্জিং পোর্ট | No |
স্পিডোমিটার | Digital |
তেল পরিমাপক | Yes |
টেকোমিটার | Analogue |
ট্রিপমিটার এর সংখ্যা | 1 |
ট্রিপমিটার | Digital |
তেল কমার সংকেত? | Yes |
ব্যাটারি কমার সংকেত | Yes |
স্টার্টিং | Electric Start |
কিল সুইচ | Yes |
ঘড়ি | Yes |
ইলেকট্রিক সিস্টেম | 12V |
ব্যাটারির সক্ষমতা | 12V, 8Ah MF |
হেডলাইট | Halogen |
পেছনের লাইট | LED Taillamp |
সিগনাল লাইট | Yes |
পাস সুইচ | Yes |
বাড়তি ফিচার | RT-Fi, GTT(Glide through technology) |