মোটর বাইক কেনার পরামর্শ বা নির্দেশিকা
2020 Jul 29 04:00:00
মোটর বাইক কেনার আগে আপনাকে
অবশ্যই কিছু গুরুত্বপূর্ণ
বিষয় খুব ভালভাবে জানতে হবে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ
ব্যাপার হল আপনার শরীরের
আকার বা সাইজ। যেমন ধরুন মোটর
বাইকটি যখন সোজাভাবে থাকে ,
এটির উপরে বসে আপনি আপনার দুই
পায়ের পাতা সমান ভাবে মাটিতে
রাখতে পারেন কিনা তা খেয়াল
করুন। যদি আপনি সমানভাবে পা
মাটিতে রাখতে না পারেন তার
মানে হল মোটর বাইকটি আপনার
জন্য একটু বেশী উঁচু। এজন্য
আপনার উচ্চতা এবং আপনার
শরীরের গঠন -এগুলো খুব
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মোটর বাইক
কেনার সময়। আর আপনি যদি হন
নুতন চালক তবে প্রথমেই আপনি
খুব হাইপারফরমেন্স বাইক
কিনবেন না ।
আপনি যদি মোটবাইক চালানোর
নিয়ম কানুন খুব ভাল ভাবে না
জানেন তবে এটা যেকোনো
মুহূর্তে আপনার জীবনের জন্য
ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
আপনি কি নুতন চালক নাকি আপনার
পূর্ব অভিজ্ঞতা আছে?
প্রথমত, আপনার মোটর বাইক
চালানোর ক্ষমতা আর দক্ষতা
দুটিই খুব ভালভাবে পরিমাপ
করুন। আপনি যদি নুতন চালক হন
তবে খুব নিরাপদে আগে বাইক
চালানো ভালোভাবে শিখুন। মোটর
সাইকেল চালানো শুরুর আগে
অবশ্যই . যথাযথ প্রশাসনের
নিকট হতে আপনাকে মোটরবাইক
চালানোর লাইসেন্স নিতে হবে ।
মোটর বাইক কিনতে আপনার বাজেট
কীরকম?
আপনার পছন্দের উপর আপনার
বাজেট নির্ভর করবে। একটি
নুতন বাইক কিনতে হলে আপনাকে ১
লাখ থেকে ২ লাখ বা ২ লাখ ৫০
হাজার টাকার মতো খরচ করতে
হবে। মোটর সাইকেল ডিলার, অটো
ডিলার বা অনলাইনে মোটরবাইকের
অনেক সাইট আছে যারা আপনাকে
অনেক ধরণের ফাইনান্সিং এ
সাহায্য করতে পারে। তারা
ববহৃত বাইকের বিভিন্ন ধরণের
অফারও দিয়ে থাকে।
আপনার জন্য কোন ধরণের বাইক
উপযুক্ত?
বাইক কেনার সময় প্রথমেই
আপনার যা মনে রাখতে হবে তা হল
আপনার শরীরের গঠন ও আকৃতি ।
বাইকের উপরে বসে আপনি যদি
আপনার দুই পা মাটিতে
সমানভাবে রাখতে না পারেন তার
মানে এই বাইকটি আপনার জন্য
একটু বেশীই উঁচু । আর আপনি যদি
নুতন চালক হন, তবে কোন মতেই
হাই পারফরমেন্স বাইক প্রথমে
কিনবেন না ।
আপনি যদি আপনার বাইকটি
প্রতিদিন আপনার যোগাযোগের
জন্য কিনতে চান তবে
স্ট্যান্ডার্ড আর সাধারণ
বাইকই হবে আপনার জন্য
উপজুক্ত।
আর আপনি যদি দূড়ের রাস্তা
চালাবেন ভেবে থাকেন সাথে
অন্য কোন প্যাসেঞ্জারও থাকবে
তাহলে ,আপনার উপযুক্ত বাইক হল
ক্রুজার ।
এছাড়া, লম্বা সময় ধরে
প্যাসেঞ্জার নিয়ে অনেক দূড়ের
পথ পাড়ি দেয়ার জন্য সঠিক
আপনার রাস্তা যদি আঁকাবাঁকা
বা পাহাড়ী হয় তাহলে আপনি
স্পোর্ট বাইক কিনতে পারেন ।
সাধারণভাবে চালানোর জন্য যদি
ফুটপাথ না থাকে তবে যাতে
আপনার উভয় উদ্দেশ্য সফল হয়
তাই স্ট্যান্ডার্ড বাইকের
সাথে গ্রাউন্ড কিলিয়ারেন্স
আর knobby টায়ারের বাইক কিনতে
পারেন ।
আপনার আরও যা কিছু প্রয়োজন-
মোটর বাইক চালানোর সময় আপনার
লাগবে হেলমেট, জ্যাকেট, বুট,
রেইন স্যুট, আর যদি আপনি চোখে
গ্লাস ব্যবহার করেন তবে
অবশ্যই চোখের গ্লাস।
ট্র্যান্সপোরটেসান আইন আর
সেফটি স্ট্যান্ডার্ড এর
জন্যই হেলমেট প্রয়োজন।
ব্যবহৃত মোটরবাইক কেনার জন্য
কিছু দিকনির্দেশনা আপনি যার
কাছ থেকেই ববহৃত বাইক কেনেন
না কেন হোক সে ডিলার বা কোন
বাক্তি, সেকেন্ডহ্যান্ড
বাইকে কেনার সময় বাইকের
অবস্থার সাথে অডোমিটার
ভালোভাবে তুলনা করে দেখবেন।
এছাড়া আরও যা কিছু আপনাকে
ভালোভাবে দেখতে হবে তা হলঃ
১। বাইকের বডিতে বা ট্যাঙ্ক
এবং ফেনডার এ ময়লা বা স্কারচ
আসে কিনা থাকলে কি পরিমান তা
দেখে নিন।ফুটপেগ টা ভালোভাবে
দেখবেন। ফুটপেগ এর উপরে খুব
বেশী পুরনো হলে জানবেন যে
বাইকটি অনেক বেশী চালানো
হয়েছে। আর এর নিচের দিকে খুব
পুরনো হয় তার মানে এটির চালক
এটিকে খুব বেশি কোন চাপা
জায়গায় রাখতেন।
২। বাইক কেনার আগে বাইক
মার্কেট এ ভালোভাবে
খোঁজাখুঁজি করে দেখুন যে
ব্যবহৃত বাইকটির সকল পার্টস
বাজারে পাওয়া যাই কিনা।
বাইকটির ফুটপেগ, মিরর,
হ্যান্ডেলবার, ব্রেক , ক্লাচ
লিভার সব কিছু ভাল করে দেখে
নিন।
৩। ইঞ্জিন এবং
ট্র্যান্সমিশান চেক করে
দেখুন তেল লিক করে বা চুইয়ে
পড়ে কিনা
৪। চেইনটি যথাযথভাবে টাইট
থাকা জরুরী এবং পরিষ্কার আছে
কিনা দেখে নিন। চেইনে ময়লা
থাকলে বুঝতে হবে বাইকটি
ভালভাবে মেইনটেইন করা হতোনা
।
৫।ব্রেকটি চেক করা
অত্যাবশ্যক । এটা মসৃণ,
পরিষ্কার থাকবে আর এটিকে যদি
ব্লু রঙের দেখতে লাগে তার
মানে হল এটি ওভার হিটিং
ব্রেক। টায়ারগুলি
অতিমাত্রায় ব্যবহার করা
হয়েছে কিনা তাও লক্ষ্য করুন।
৬।যদি বাইকটি স্টার্ট করার
পর নীল ধোঁয়া বের হয় তাহলে
বাইকটি কেনা থেকে বিরত
থাকুন। কারণ নীল ধোঁয়া
পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।
মোটর বাইক কেনার সময় নিম্নের
চেকলিস্ট টি আপনি ফলো করতে
পারেনঃ
১। প্রথম একটা বাইক দেখেই
সেটি কিনে ফেলবেন না । অভিজ্ঞ
কাউকে সঙ্গে নিন আপনার
বন্ধুর বাইকটি একটু চালিয়ে
দেখেন । তার সাথে বাইকের
গুনাগুন নিয়ে আলোচনা করুন।
এটি চালানো সহজ কিনা সেসব
নিয়ে কথা বলুন। সেন্টার লাইন,
নীচের ফরক এসব
২।বারের উপর স্ক্রাপ দেখুন ,
কেমন বেন্ড হয় চেক করুন।
লিভার এর কার্যকরীতা
ভালোভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা
করুন। চিপগুলী কি ছোটো না বড়,
গভীর কিংবা অগভীর, সমান্তরাল
নাকি ও সমান্তরাল এগুলো
ভালোভাবে দেখে নিন ।
৩। ভল্টের মধ্যে ১/১৬ ইঞ্চি
সেফটি ওয়ার হোল চেক করুন ।
বিশেষ করে ক্লীপার মাউনটেইণ
বোল্টশ, এক্সজোসট বোল্ট
ইত্যাদি । আপনি যে মডেল কিনতে
চান তার দোষ কি কি সেগুলো
জানুন । ব্রেকটি ঠিক আছে কিনা
আর সহজেই হ্যাণ্ডেল করা
যাচ্ছে কিনা চেক করুন। দেখে
নিবেন ব্রেক এ কোন পালসিং
থাকেবা না।
৪। ক্লাচ লিভারটি চেক করুন ।
দেখুন ক্লাচ রিলিজ করার সময়
squeeze করে কিনা । গ্যাস ট্যাঙ্ক
পরীক্ষা করুন । গ্যাস
ট্যাংকের ভিতরের দিকে মসৃণ
কোটিং থাকবে । গাড় রঙের গ্যাস
দেখলে বুঝবেন যে এটি পুরনো
গ্যাস যা পরিবর্তন করতে হবে ।
৫। সব ইলেকট্রিক লাইট,
ব্যাটারি, এবং সুইচ গুলি
পরীক্ষা করুন। স্টার্ট এর
শব্দটি খেয়াল করুন । এই
শব্দের ধরণ শুনে আপনি
ব্যাটারির অবস্থা বুঝতে
পারবেন ।
৬। সিল লিকের জন্য ফরক চেক
করুন । স্স্কারচেস , পায়ের
নিক্স, ব্যান্ড ,টুইস্ট খতিয়ে
দেখুন । দুপাশের চাকার
ডেনট,ক্রাক দেখুন।
নিখুঁতভাবে চেইনের বা স্পারক
ওয়্যার দেখুন কোন সমস্যা আছে
কিনা।
৭। বারবার স্টার্ট করে এবং
ইঞ্জিনের অপারেশান ভালোভাবে
পরীক্ষা করুন । কোথাও কোন লিক
বা ছিদ্র আছে কিনা দেখে নিন ।
এছাড়া আপনি মোটর বাইক
সম্পর্কিত ওয়েব সাইটগুলিতে
অনেক গুরুত্বপূর্ণ টিপস
পাবেন মোটর বাইক কেনার জন্য ।
মোটর বাইক সেফটি সোসাইটি
পরামর্শ দেয় যে আপনি
প্রতিবার এটি চালানোর আগে
টায়ার প্রেশার আর বাইকের
অবস্থা অবশ্যই দেখে নিবেন ।
আর আপনার নিরাপত্তার জন্যই
কন্ট্রোল, ক্যাবেল, হোজেস,
চাকা, ব্রেক, লাইটস, চেইন,
সাসপেনসান সব কিছু নিয়মিত
চেক করবেন।যথাযথ নিয়ম মেনে
বাইক চালান আর নিরাপদে
থাকুন।
[সূত্র অনলাইন]