কারবুরেটর এবং ফুয়েল ইঞ্জেকশন কী?
2020 Feb 17 08:57:00
প্রথমেই জেনে নেই কারবুরেটর
কি এবং কি ভাবে কাজ করে
এখানে আগেই বলে নিচ্ছি আমি
কারবুরেটর এর গঠন নিয়ে কোন
আলোচনা করব না। শুধু কাজ নিয়ে
আলোচনা করব।
কারবুরেটর আধুনিক বাইকের
সবথেকে পুরানো ফুয়েল
সিস্টেম।
কারবুরেটর হচ্ছে ইঞ্জিনের
এমন একটা অংশ (ঠিক ইঞ্জিনের
অংশ নয় তবে অংশ থেকে কম নয়) যা
কম্বাস্টন চেম্বারে ফুয়েল
সাপ্লাই দেওয়ার মাধ্যমে
ইঞ্জিনকে চালু রাখে।
কারবুরেটর অনেক সেনসেটিভ
একটি পার্টস। এর সামান্যতম
ত্রুটি বাইকের পারফর্মেন্স
কমিয়ে করে দিতে পারে।
ভোগান্তিতে ফেলতে পারে একজন
বাইকারকে।
কারবুরেটর এর কাজ
কারবুরেটর এর সাথে আরও দুটি
অংশ সংযুক্ত থাকে- ১। এয়ার
ফিল্টার এবং ২। ফুয়েল
ট্যাংক।
কম্বাস্টন চেম্বারে যখন
সাকশনের সৃষ্টি হয় (পিস্টন
নিচের নামার কারনে একধনের
ভ্যাকুয়াম তৈরী হয়) তখন বাতাস
কারবুরেটর এর ভিতর দিয়ে
কম্বাস্টন চেম্বারে প্রেবেশ
করে। যেহেতু আগেই ফ্লট
চেম্বারে ফুয়েল পৌঁছে থাকে,
এই জন্য বাতাস কম্বাস্টন
চেম্বারে প্রবেশ করার সময়
ফুয়েল নিয়ে প্রবেশ করে। কি
পরিমান বাতাস কমবাস্টন
চেম্বারে ঢুকবে সেই রেশিও
পাইলট জেট এর মাধ্যমে ঠিক করে
রাখা হয় আগেই। এই রেশিও সকল
বাইকেই সেট করা থাকে। তবে
বাইক ভেদে এই রেশিও ভিন্ন হতে
পারে। থ্রটল যখন বাড়ানো হয়
তখন বাতাস বেশি পরিমানে ঢোকা
শুরু করে সেই সাথে বেশি
ফুয়েলও ঢোকা শুরু করে।
কারবুরেটর এর সুবিধা
১। খুব সহজেই মেরামতজোগ্য
২। মেকানিকের সাহায্য ছাড়াই
প্রয়োজনমত ফুয়েল এয়ার রেশিও
এডজাস্ট করা যায়। (তবে এই জন্য
বাইকারকে অভিজ্ঞ হতে হবে, উচু
কোন পাহাড়ে বাইকের কম্প্রেশন
রেশিও কমে যায় সে ক্ষেত্রে
এয়ার রেশিও বাড়িয়ে দিতে হয়)
৩। কারবুরেটর খোলার দরকার
হলে ইঞ্জিনের কোন কিছু না
খুলেই বেড় করে আনা যায়।
৪। দাম কম
৫। মেইন্ট্যানেন্স কস্ট কম।
৬। সহজলভ্য
৭। সহজে নষ্ট হয়না (সঠিক
রক্ষণাবেক্ষণ এর উপর নির্ভর
করে)
৮। প্রতিকুল পরিবেশেও টিকে
থাকতে পারে।
৯। রাস্তায় কোন সমস্যা হলে
নিজেই সহজেই মেরামত করে আবার
চালু করা যায় (বাইক ডেড হয় না)
কারবুরেটর এর অসুবিধা
১। খুব তাড়াতাড়ি ময়লা জমে জার
জন্য পারফর্মেন্স কমতে শুরু
করে।
২। পাইলট জেট এ খুব তাড়াতাড়ি
ময়লা জমে কাজ করা প্রায় বন্ধ
করে দেয় (এ সময় বাইকে অনেক
সমস্যা দেখা দেয়)
৩। পাওয়ার ডেলিভারিতে ল্যাগ
হয়
৪। বাতাস এবং ফুয়েল মিক্সার
কনস্ট্যান্ট থাকে না জার
জন্য ফুয়েল ইফিশিয়েন্ট হয় না
৫। অপটিমাম পাওয়ার ডেলিভারি
পাওয়া যায় না।
৬। আইডল আরপিএম একেক সময় একেক
জায়গায় থাকে। স্থির থাকেনা
৭। কোল্ড স্টারটিং এ সমস্যা
করে।
এবার কথা বলব ফুয়েল ইঞ্জেকশন
নিয়ে
ফুয়েল ইঞ্জেকশন এর সাথেও
দুটি জিনিস লাগানো থাকেঃ ১।
এয়ার ফিল্টার ২। ফুয়েল
ট্যাংক (ফুয়েল ট্যাংক এ একটি
ফুয়েল পাম্প থাকে জার কাজ
ফুয়েলকে পাম্প করে ইঞ্জেকটর
এ পাঠানো)
এখানে ইঞ্জেকটর এর গঠন নিয়ে
কোন কথা বলব না শুধু কাজ নিয়ে
বলব।
ফুয়েল ইঞ্জেকশন একটি জটিল
প্রসেস। এটি কম্পিউটারিজড।
অনেক সেন্সর এর সমন্বয়ে
গঠিত। এই সেন্সর এর মাধ্যমে
ইসিইউ ঠিক করে বাইকে কি
পরিমান বাতাস এবং ফুয়েল এর
মিশ্রন ঘটাতে হবে।
ইসিইউ এয়ার ইনটেক সেন্সর এর
মাধ্যমে ডিটেক্ট করে সেই
পরিমান ফুয়েল স্প্রে করে।এতে
করে ফুয়েল ইঞ্জেকটর একদিকে
যেমন ফুয়েল ইফিসিয়েন্সি হয়
তেমন অপটিমাম পাওয়ার
ডেলিভারি দিতে পারে।
যখন থ্রটল বাড়ানো হয় তখন এয়ার
ইনটেক বেড়ে যায় তখন ইসিইউ সেই
বাতাশের রেশিও ডিটেক্ট করে
সেই রেশিও এর জন্য যতটুকু
ফুয়েল দেওয়া দরকার সেই টুকু
ফুয়েল ইঞ্জেকটরকে কমান্ড করে
স্প্রে করার জন্য
ফুয়েল ইঞ্জেকটরের সুবিধা
১। ফুয়েল ও এয়ার রেশিও
অপটিমাম হওয়ার কারনে ফুয়েল
পুরটাই বার্ন হয়
২। ফুয়েল সঠিক বার্ন হওয়ার
কারনে ভালো মাইলেজ পাওয়া যায়
সেই সাথে ভালো পাওয়ার ও পাওয়া
যায়।
৩। ফুয়েল ইঞ্জেকশনে
ইন্সট্যান্ট পাওয়ার পাওয়া
যায়, কোন ল্যাগ হয় না
৪। কোল্ড স্টারটিং এ কোন
সমস্যা হয় না
৫। আইডল আরপিএম সঠিক জায়গায়
থাকে
৬। সঠিক পাওয়ার ডেলিভারির
জন্য ইঞ্জিন ওয়েক স্মুথ থাকে
৭। এইটি পরিবেশ বান্ধব
৮। ট্যাংক এর সব ফুয়েল
ব্যবহার করা যায়
ফুয়েল ইঞ্জেকশনের অসুবিধা
১। এইটা আধুনিক প্রযুক্তি
তাই কিছুটা ব্যয়বহুল
২। রিপেয়ার করা অনেক কঠিন
কাজ। অনেক সময় বাধ্য হয়ে
চেঞ্জ করতে হয়
৩। ইসিইউ চীপ নষ্ট হয়ে গেলে
বাইক বন্ধ হয়ে যায়। রিপ্লেস
ছাড়া কোনভাবেই বাইক চালু করা
যায় না
৪। মেরামত খরচ বেশি
৫। মেরামত প্রসেস জটিল
৬। ইঞ্জিকটরের কারনে বাইক
বন্ধ হয়ে গেলে নিজে থেকে কোন
ভাবেই ঠিক করা সম্ভব হয় না।
৭। বাইকে মিনিমাম ২ লিটার
ফুয়েল রাখতে হয়। কারন
ইঞ্জেকটর এ বাতাস ঢুকলে
ইঞ্জেকটর না খোলা পর্যন্ত
কাজ করবে না।
৮। তাড়াতাড়ি নষ্ট হওয়ার
সম্ভবনা বেশি
[সংগ্রহ]