ঈদে যারা লং ড্রাইভে যাবেন তাদের জন্য জরুরী পরামর্শ
2019 Aug 11 01:16:00
১। সূর্যের আলো যতই প্রখর হোক
না কেন, হাইওয়েতে সবসময় ফগ
লাইট জ্বালিয়ে রাখুন। ফগ
লাইট না থাকলে হেডলাইট
জ্বালান। এতে করে আপনার
উপস্থিতি হাইওয়েতে অনেক দূর
থেকে দেখা যাবে। একই কারণে
কালো কাপড় পরিহার করে
যথাসম্ভব উজ্জ্বল যেমন হলুদ
বা টিয়া কালার (লাইম কালার) এর
উইন্ডব্রেকার পড়ুন। এতে
আপনার সেফটি অনেক বেড়ে
যাবে।
২। ভালো হেলমেট ব্যবহার
করুন। বাজারে যে হেলমেট
পাওয়া তা অত্যন্ত
নিন্মমানের। বাজেট নিতান্তই
কম হলে অন্তত ২৫০০ টাকা দিয়ে
STUDDS ব্রান্ডের হেলমেট নিতে
পারেন। কিন্তু এর চেয়ে নিচে
কখনই না।
৩। সেফটি গার্ডস পড়ুন। ভালো
সেফটি গার্ডস শুধু আপনার
আত্মবিশ্বাস বাড়াবে না,
দীর্ঘক্ষণ চলার ক্লান্তি
অনেকাংশে কমিয়ে দিবে।
৪। পিলিয়ন যদি ফিমেল হয়,
তাহলে তারও বাইকারের মত
সেফটি পোশাক পড়ে দীর্ঘ পথ
পাড়ি দেওয়ার জন্য রাইডারের
মত বসা বাঞ্ছনীয়। এতে
ব্যালান্সিং নষ্ট হবে না।
সমস্যা হলে ফিমেল নিবেন না।
৫। ইদের আগে ও পরে অনেক নতুন
চালক নতুন বাইক চালিয়ে
গ্রামের বাড়ি যেতে চান।
আপনি ভালো বাইকার না হলে
আল্লাহ্র ওয়াস্তে হাইওয়ে
ত্যাগ করুন। হাইওয়ের
গ্রামার আলাদা ভাই। অভিজ্ঞ
মেন্টরদের নিয়ে এটা আগে
আয়ত্ত করতে শিখুন। তাছাড়া
এখানে চালানো আপাত দৃষ্টিতে
সহজ মনে হলেও মাঝে মাঝে এমন
পরিস্থিতির ভিতর দিয়ে যেতে
হবে, যেটা কাটাতে হলে আপনাকে
যথেষ্ঠ দক্ষ হতে হবে। বাইক
চালানো শিখার পরে শহরে কিংবা
ছোট রাস্তায় অন্তত
৫০০০-৭০০০ কিমি চালানোর
অভিজ্ঞতা থাকলে হাইওয়েতে লং
জার্নির জন্য আসতে পারেন।
একা না এসে একজন এক্সপার্টকে
সাথে নিয়ে আসবেন।
৬। এখন বৃষ্টির সময় তাই
রেইনকোট অবশ্যই রাখবেন। সাথে
শু কভার রাখবেন। বাজারে যে
গ্লাভস পাওয়া যায়, তা
পানিরোধক না। এজন্য যেকোন
ফার্মাসির দোকান থেকে
সার্জারি গ্লাভস কিনতে
পারেন। দাম খুবই কম।
সার্জারির গ্লাভসের উপর মেইন
গ্লাভস পড়লে হাতে পানি
ঢুকবে না।
৭। রাস্তায় হঠাৎ বৃষ্টি
হওয়া শুরু হলে বাইক রাস্তার
পাশে থামান। এসময় রাস্তার
বালু-মাটি পানির সাথে মিশে
খুবই পিচ্ছিল থাকে। ৫-৭ মিনিট
বৃষ্টি হওয়ার পর রাস্তার
মাটি ধুয়ে যাবে। আবার বাইক
স্টার্ট দিন। এর মাঝে আপনার
রেইনকোট পড়ে নিন। চাকার
হাওয়া কমিয়ে নিন।
৮। হাইওয়েতে রাতের বেলায়
প্রচলিত নীল LED বাতির থেকে
হ্যালোজেন অথবা হলুদ বাতি
বেশী কার্যকর। এতে রাস্তার
কন্ডিশন ভালো বুঝা যায়।
আমাদের চোখে হলুদ আলো
সবচেয়ে বেশী অনুভূতির
সৃষ্টি করে। আপনার বাইকে নীল
LED বিল্ট-ইন থাকলে হলুদ ফগ লাইট
লাগান। তাহলে হ্যালোজেনের
একটা ফিলিংস পাবেন।
৯। যতই এক্সপার্ট হোন না কেন,
হাইওয়েতে রাতের বেলা বাইক
চালানো পরিহার করুন। বৃষ্টির
রাতে একেবারেই না। রাতে
রাস্তা শুকনো না ভেজা তা বোঝা
মুশকিল।
১০। একজন ডিসেন্ট এবং দক্ষ
বাইকার সবসময় ইনডিকেটর
ব্যবহার করেন। লেন
পরিবর্তনের জন্য ইনডিকেটর
ব্যবহার করুন। কাউকে সাইড
দিতে চাইলে বাম পাশের
ইনডিকেটর জ্বালান, সাইড না
দিতে চাইলে কিংবা নিজে
ওভারটেক করতে চাইলে ডান
পাশের ইনডিকেটর জ্বালান।
বাইক থামাতে চাইলে বাম পাশের
ইনডিকেটর জ্বালিয়ে আস্তে
আস্তে ব্রেক করে থামান।
১১। ইমার্জেন্সি ব্রেকিং এর
ক্ষেত্রে কখনই ক্লাচ চাপবেন
না। ভেজা রাস্তায় দুই
ব্রেকের সাথে ইঞ্জিন ব্রেক
এপ্লাই করুন। কোরবানীর ঈদে
গোবর হইতে সাবধান । স্পিড
নিয়ন্ত্রণে রাখুন ।
১১। তিন চাকার যানবাহনের
ক্ষেত্রে বিশেষ সাবধানতা
অবলম্বন করুন। এদের সামনের
চাকা বডি দিয়ে ঢাকা থাকে বলে
মুভমেন্ট বোঝা যায় না।
তাছাড়া রাস্তার ওপরে হঠাৎ 360
মারে।
১২। অবশ্যই বেশি বেশি পানি
খাবেন সাথে গ্লুকোজ বা
স্যালাইন মিশিয়ে, ডাব পেলে
মিস করবেন না ।
১৩। দীর্ঘ যাত্রাপথে অবশ্যই
এবং অবশ্যই নামাজ পড়বেন।
বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণিত
যে ভ্রমণ ফ্যাটিগের জন্য
নামাজ সর্বোত্তম ব্যায়াম।
মানসিক প্রশান্তির কথা না
হয় বাদ দিলাম।
আপনার উপর নির্ভর করে বসে আছে
আপনার বাবা মা, স্ত্রী,
ছেলে-সন্তান। একটুখানি হর্ষ
যেন তাদের বিষাদের কারণ না
হয়ে দাঁড়ায় সেদিকে খেয়াল
রাখুন। বাইকে বসার পর যাত্রা
শুরুর আগে অবশ্যই আল্লাহর
কথা স্মরণ করুন।